কলেজ প্রেম ০১
#প্রেম ১
আজ তোমাদের শোনাবো সোমার কাহিনী, কে এই সোমা কেনোই বা সে হটাৎ করে অরকুট থেকে বিদায় নিয়েছিল।।।।
তার গল্প টা জানতে হবে বৈকি।।।
আচ্ছা তার মুখেই শুনি তার কাহিনী।।
আমি সোমা ব্যানার্জী, সোনামুখী তে বাড়ি ।।। বাবা সামান্য দোকানদার ।।
ছোট ভাই মা বাবা কে নিয়ে আমার সংসার ।।
ছোটবেলা থেকেই আমলা হবার স্বাদ লালন করতাম অন্তরে কিন্তু বাধ সাধলো শারীরিক অসুস্থতা।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারলাম না।।।
একটা বছর নষ্ট হবে ভেবে পলি ৪০ দিয়ে ভর্তি হলাম কেজিতে।।।।
বিষ্ণুপুর বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি না হলেও মেসে থাকলাম।
রোজকার যাতায়াতের শারীরিক ধকল থেকে বাঁচতে।।।
প্রথম দিনে কলেজে যেমন তেমন করে কাটলেও বেশ বুঝতে পারছিলাম বেশ অনেক সিনিওর আমার দিকে বেশ তাকিয়ে থাকছে।
ক্লাসমেট রাও দেখছে কিন্তু মনে হয় ভয় পাচ্ছে যদি সিনিওর দের।।।
আজ কেজিতে আমার সাত দিন পূর্ণ হলো।।
ইতি মধ্যে ৭ জন আমাকে প্রপোজ করেছে ।।।
তার মধ্যে ৫ জন সিনিওর আর ২ জন সহপাঠী।।।।
কিন্তু সবাই ওই প্রেম করতে হয় বলে বা কলেজ উঠেছি প্রেম করবো না,,এই ভাবনা নিয়ে প্রেম করছে ।
কারোর চোখ আমার সাথে কথা বলার সময় আর চোখের দিকে স্থির নয়।।।সবাই অস্থিরমতি কিন্তু একজন কে এই কয়দিনে আলাদা দেখেছি,,,প্রথম দিন ,,,
ছেলেটা অন্য রকম ,,ওর ভাবনাতে রবীন্দ্রনাথ মার্জিত কিন্তু বড্ড বেশি অন্তমুখি কোনোদিন কারোর সাথে গল্প করতে দেখলাম না।।।হাসতে দেখলাম না।।।যেনো আস্ত রাম গরুড়ের ছানা।।।
আজ কেজিতে আমার একমাস পূর্ণ হলো।।।
মেসে আমরা সব মিলিয়ে ৭ জন থাকি।।।
দুজন ফার্স্ট ইয়ার দুজন সেকেন্ড ইয়ার আর তিনজন থার্ড ইয়ার।।।
সবাই প্রেম করে রাত ১১ থেকে সবাই যে মত ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে।। ভোর রাত অব্দি সবাই কথা বলে।।
বাতাসে ফিসফিস হাসি কান্না গোঙানি সব রকম শব্দ ভেসে আসে ।
সিনিওর দিদিদের বারণ ১১ টার পর লাইট জ্বালানো যাবে না।।।
তাই গল্পের বই ব পড়ার বই পড়তে পারি না।।।
বিছানায় শুয়ে এ পাস ও পাস করি।।
কিছুতেই ঘুম আসেনা বিভিন্ন শব্দে।।।
এর মধ্যে কৌস্তভ বলে এক সহপাঠীর সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে।।। মেসের এক দিদির পরতুত ভাই।।।দিদি এক প্রকার জোর করে ওর সাথে বন্ধুত্ব করিয়ে দিয়েছে।।।গত সপ্তাহে আমার জন্মদিন ছিল তাই মেসে সবাই কে খাওয়াতে হয়েছে।।।ভাগ্যিস কৌস্তভ ছিল নাতো ওই মারুই বাজারের মাতাল গুলোর সাথে লাইন দিয়ে মদ কিনতে হতো।।।
সিনিওর দের এখানে অগ্রাহ্য করে এক দিন কাটানো যাবে না।।।
তাই আমিও খেলাম জীবনে প্রথমবার বিয়ার বেশ ভালই লাগলো খেতে।।।এক সিনিওর দিদি একদিন জোর করে সিগারেট ও খাইয়েছিল ।
কেমন যেনো বেপরোয়া ভাব এসে যাচ্ছিল ।।
কৌস্তভের বারংবার প্রপোজাল একদিন সারাও দিয়ে ফেললাম।।।
এখন আমিও প্রেম করি কৌস্তভের সাথে ।। ক্লাস এ পাশাপাশি বসি।।।ছুটির পর কৌস্তভ প্রত্যেক দিন আমাকে মেস অব্দি ছেড়ে দিয়ে যায় ।
রসমঞ্চ লালদীঘি লালঘর ঘুরে বেড়াই।। রূপকথা তে সিনেমা দেখি
।। লস্যি সেন্টার বা শ্রী হোটেল গিয়ে খাই।।।
বেশ ভালই চলছিল।।।কৌস্তভ আমুদে বেশ মজার কথা বলে,স্বপ্ন দেখে স্বপ্ন দেখায় ।
আমাদের অন্তরঙ্গতা বেড়ে গেছে অনেক বেশি।।সারারাত আমরা কথা বলি এখন ফোন ।।।আর নিন্দুকেরা বলে রাত ১১ টার পর আমার খাটের চারপাশেও নাকি নানা রকম অভিধান বহির্ভূত শব্দ ভেসে বেড়ায়।।
কিন্তু সকল আনন্দ উত্তেজনা যেখানে কেন্দ্রীভূত হয় সেখানেই মনে হয় বিপদ অত পেতে থাকে।।
আমাদের সম্পর্কের ২ মাসের মাথার একদিন ঘটনা, প্রথমদিনের অসহ্য তলপেটের যন্ত্রনায় মন শরীর দুটোই ভাল ছিল না।।
কিন্তু রাত ১১ টাই কৌস্তভ ফোন করে কথা বার্তা শুরু করলো মাঝ রাতের দিকে কৌস্তব বারম্বার উত্তেজনার বশে মনের আগল খুলে কথা বলার জন্য জেদ করতে থাকলো।।। আমার শারীরিক মানসিক অবস্থার কোনরূপ কথাই সে কানে তুলতে চাইলো না।।।
মুহুর্তের মধ্যে রাগের আগুনে পুড়ে ওর সাথে সম্পর্কের ওখানেই ইতি জানলাম।।
ভবিষ্যতে বহু বার বহু উপায়ে ও আবার জোড়া লাগাবার চেষ্টা করলেও সেই দিনের অপমান আমি কোনোদিন ভুলতে পারি নি। যে ছেলে নারীত্ব কে বুঝতে চাই না ।। তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা মানে নারী জাতির অসন্মান করা।
যাই হোক গত দি মাসে কৌস্তভ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকলেও রাতের অন্ধকার যেনো তার অভাব বুঝিয়ে দেয়।। সেটা আরো প্রকট আরো গভীর করে তোলে মেসের অন্যদের তাদের প্রীয়তমদের সাথে কথাবার্তা হাসিমস্করা তে।।
একদিন হঠাৎ ইচ্ছে হলো অরকুট এ একাউন্ট খুলতে।।
বিভিন্ন বন্ধু হল চেনা অজানা অনেক অনেক বন্ধু ।।
এমনি এক বন্ধু হলো কেজি থেকে পাস আউট এক সিনিওর দাদা।।
দাদার লেখা স্ক্র্যাপ বুক দেখে দাদার ভক্ত হয় উঠলাম।।।
এক রাত্রে যখন অরকুট খুলেছি দেখলাম ফ্রেন্ড সাজেশন এ দীপ চ্যাটার্জী। কেমন যেনো সেই প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।।। হটাত যেনো বুকের ভিতরে কেমন পাক দিয়ে উঠলো ।।রবীন্দ্রনাথ দাড়ি রামছাগল জিব জীবন এই শব্দ গুলো মাথার মধ্যে চরকিপাক খেতে লাগলো।।
ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দেবার জন্য হাত নিসপিস করছিল কিন্তু কেনো জানি না কে আমায় বাধা দিছিলো।।
সামনে কোনো বন্ধু নেই যে এই সময় সাহায্য করবে।।।
হটাত অনলাইনে ওই পাস আউট দাদা কে দেখলাম।।
লাজ সরম ভুলে ওই দাদা কে অন্তরের কথা বললাম।।আমার ভয়ের কথা, হৃদয়ের গভীরে হওয়া ক্ষত কথা।।।
দীপের কথা কৌস্তব এর কথা সব।।।
সব শুনে দাদা বললো কি চাস এখন ??
জবাব দিলাম জানি না তবে আজ দীপ কে অরকুট দেখে কেনো জানিনা কেমন জানি হাত পা হালকা হয় যাচ্ছে, তল পেটে যেনো একটা বাতাস আটকে আছে যা বুকে বারবার ধাক্কা মারছে।।।
দাদা: তাহলে কথা বল দীপের সাথে।।
কিন্তু ও জেরকম চুপ চাপ আর গম্ভীর কথা যদি না বলে।
দাদা: না বললে বলবে না , কিন্তু আজ যদি একবার চেষ্টা না করিস ও কোনোদিন বলবে না এটা গ্যারান্টি দিতে পারি।
অগত্যা মনে জোর এনে অরকুট এ রেকুরস্ট পাঠিয়ে দিলাম।
তার পরের ঘটনা আপনরা হইতো কিছুটা জানেন আগের গল্পের মধ্যে দিয়ে যেটা জানেন না তা হলো দীপ কথায় কথায় একদিন বলেছিল ও বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছে কেজির ৩ বছরে কোনরুপ প্রেম করবে না।।
তাই আমার ইচ্ছে ছিল ওর প্রতিজ্ঞা না ভাগানোর ।।
মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম ওর কলেজের শেষ দিনে ওকে প্রপোজ করবো যাতে ওর প্রতিজ্ঞা থাকে আর আমাদের সম্পর্ক নতুন দিশা পাক।।।
কিন্তু বিধি বাম কথায় কথায় জানতে পরলাম ওর মন আটকে রাখতে রাখতে পাথরের মত হয় গেছে ওর কাছে বিয়ে সংসার খালি করতে হয় তাই করবে।।।কোনো ভালোলাগা মন্দলাগা কিছুই নেই।।।
প্রচন্ড রাগ হলো অরকুট ছেড়ে দিলাম দীপ ও দেখলাম কোনো ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করছে না।।।
ভিতরে ভিতরে জ্বলতে লাগলাম পুড়ে ছারখার হতে লাগলাম।।।
তবুও ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ছাড়লাম না।।।।
পরের সপ্তাহে ফেওয়ার ওয়েল তার পর দীপ কে হইতো কোনোদিন দেখতেও পাব না।।।
হটাৎ ফোন কন্টাক্ট চেক করে দেখি সেই সিনিওর দাদার নম্বর সেভ করা আছে।।
কি মনে হলো করলাম ফোন
দাদা ফোন ধরেই বললো বল আবার কি সমস্যা??
কিসের উত্তর খুঁজে পাচ্ছিস না ।।।
তুমি জানলে কেমন করে যে আমি কিছুর উত্তর খুঁজছি।।।
দাদা: কারণ লাস্ট ৮-৯ মাসে কোনো কথা হইনি।।।আজ হটাত করে একদম ফোন করলি তাই বললাম।।।
সব কথা খুলে বললাম ,
সব শুনে দাদা বললো,
জীবনের দেখার ভঙ্গির মধ্যে বদল আন।।।তোর নিজের চিন্তা ভাবনা যতটা জরুরি অন্যের দিক থেকে ভাবা টাও জরুরি তাই এটা ভেবে দেখ কতদিন একটা ছেলে একটা বদ্ধতার মধ্যে ছিল, তার সেই জরতা ভাঙতে সময় লাগবে।।
কিন্তু কতদিন ৮-৯ মাস কি যথেষ্ট সময় নও।।
সে তো ম্যাডাম ডাক্তার এর যশের উপর নির্ভরশীল।।
ডাক্তার যত ভালো হবে রুগী তত তাড়াতাড়ি সেরে উঠবে।।।
এবার কিন্তু তুমি আমাকে অপমান করছো।।
না আমি তোকে এন্থু দিচ্ছি ।
কিন্তু একবারও বিয়ের ব্যাপারে আমার কথা ভাবল না,বললো বাবা মায়ের পছন্দ মত বিয়ে করতেও আপত্তি নেই।।এটা আমার অপমান নয়।
উহু নও ।
কেনো???
কারণ তুই ওর মনে সেই ভাবনার রেশ আস্তে দিস নি।।
আর বোনটি জীবনে ক্ষমা করতে শেখ নইলে প্রত্যেকের জীবনে একটা ভুল যদি তাকে জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দিতে শুরু করিস তাহলে একদিন জনশূন্য হয় জাবি।।।
ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ না করলে ক্ষমা কর অপরাধীর স্বার্থে নয় নিজের স্বার্থে।।
নিজের শান্তির জন্য।।।।
তাহলে এবার আমি কি করবো???
সেটার উত্তর ত তোকেই খুঁজে পেতে হবে।।।শুধু এটুকু বলতে পারি প্রাথমিক ভাবে যেভাবে চেষ্টা করেছিলি সেভাবেই করতে পারিস।।।
পরের দিন গেলাম কার্ড প্রিন্টিং প্রেস এ।।।একটা মাত্র কার্ড তাও আবার পাত্রের নাম ছাড়া এমন আজগুবি দাবি শুনে বেশ কিছু প্রেস তাড়িয়ে দিল খাসা শব্দের সাথে।।।
শেষমেষ অনেক কষ্টে এক বন্ধুর সাহায্যে বানালাম একটা কার্ড।।।
তার পর প্রতীক্ষা,,,
আজ কার্ড টা দীপ কে দিয়ে এলাম,। কিন্তু এত খামখেয়ালি আমি যে ওর কথা শোনার জন্য দাড়ালাম না।।।।
ও যোগাযোগ করবে বা কিভাবে সেটাও ভাবলাম না।।। এখন এক উপায় যদি অরকুট কিছু রিপ্লাই দেয়,
অরকুট টা লগ অন করলাম ,
দীপের ম্যাসাজ এসেছে
সেই প্রথম দিনের মতো যেনো একটা হাওয়ার দলা বুকের কাছে আটকে আছে,,,
কাঁপা হাতে ম্যাসাজ খুললাম
লেখা
বুক দুপ
বুক ধুকপুক,,
বুকের ভেতর দামামা বাজছে,'
" কাল সকালেই বাড়ি চলে যাবো ভেবেছিলাম,কিন্তু ভাবছি কাল বিকেলে যাবো।।।
কাল সকালে ছিন্ন মোস্তার মন্দিরে যেতে পারবে আমার সাথে একটা মানত করেছিলাম ,পুজো দেব। আর হ্যাঁ তোমার ফোন নম্বর টা দাও।।কখন দরকার পরে
।।
এখন আমি আমার নম্বর টা ম্যাসাজ করছি
।।
শেষের চারটে নম্বর চোখের জলের দু ফোঁটা ঝাপসা করে দিয়েছে।।।।।।।
©️ কৌশিক
আজ তোমাদের শোনাবো সোমার কাহিনী, কে এই সোমা কেনোই বা সে হটাৎ করে অরকুট থেকে বিদায় নিয়েছিল।।।।
তার গল্প টা জানতে হবে বৈকি।।।
আচ্ছা তার মুখেই শুনি তার কাহিনী।।
আমি সোমা ব্যানার্জী, সোনামুখী তে বাড়ি ।।। বাবা সামান্য দোকানদার ।।
ছোট ভাই মা বাবা কে নিয়ে আমার সংসার ।।
ছোটবেলা থেকেই আমলা হবার স্বাদ লালন করতাম অন্তরে কিন্তু বাধ সাধলো শারীরিক অসুস্থতা।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারলাম না।।।
একটা বছর নষ্ট হবে ভেবে পলি ৪০ দিয়ে ভর্তি হলাম কেজিতে।।।।
বিষ্ণুপুর বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি না হলেও মেসে থাকলাম।
রোজকার যাতায়াতের শারীরিক ধকল থেকে বাঁচতে।।।
প্রথম দিনে কলেজে যেমন তেমন করে কাটলেও বেশ বুঝতে পারছিলাম বেশ অনেক সিনিওর আমার দিকে বেশ তাকিয়ে থাকছে।
ক্লাসমেট রাও দেখছে কিন্তু মনে হয় ভয় পাচ্ছে যদি সিনিওর দের।।।
আজ কেজিতে আমার সাত দিন পূর্ণ হলো।।
ইতি মধ্যে ৭ জন আমাকে প্রপোজ করেছে ।।।
তার মধ্যে ৫ জন সিনিওর আর ২ জন সহপাঠী।।।।
কিন্তু সবাই ওই প্রেম করতে হয় বলে বা কলেজ উঠেছি প্রেম করবো না,,এই ভাবনা নিয়ে প্রেম করছে ।
কারোর চোখ আমার সাথে কথা বলার সময় আর চোখের দিকে স্থির নয়।।।সবাই অস্থিরমতি কিন্তু একজন কে এই কয়দিনে আলাদা দেখেছি,,,প্রথম দিন ,,,
ছেলেটা অন্য রকম ,,ওর ভাবনাতে রবীন্দ্রনাথ মার্জিত কিন্তু বড্ড বেশি অন্তমুখি কোনোদিন কারোর সাথে গল্প করতে দেখলাম না।।।হাসতে দেখলাম না।।।যেনো আস্ত রাম গরুড়ের ছানা।।।
আজ কেজিতে আমার একমাস পূর্ণ হলো।।।
মেসে আমরা সব মিলিয়ে ৭ জন থাকি।।।
দুজন ফার্স্ট ইয়ার দুজন সেকেন্ড ইয়ার আর তিনজন থার্ড ইয়ার।।।
সবাই প্রেম করে রাত ১১ থেকে সবাই যে মত ফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরে।। ভোর রাত অব্দি সবাই কথা বলে।।
বাতাসে ফিসফিস হাসি কান্না গোঙানি সব রকম শব্দ ভেসে আসে ।
সিনিওর দিদিদের বারণ ১১ টার পর লাইট জ্বালানো যাবে না।।।
তাই গল্পের বই ব পড়ার বই পড়তে পারি না।।।
বিছানায় শুয়ে এ পাস ও পাস করি।।
কিছুতেই ঘুম আসেনা বিভিন্ন শব্দে।।।
এর মধ্যে কৌস্তভ বলে এক সহপাঠীর সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে।।। মেসের এক দিদির পরতুত ভাই।।।দিদি এক প্রকার জোর করে ওর সাথে বন্ধুত্ব করিয়ে দিয়েছে।।।গত সপ্তাহে আমার জন্মদিন ছিল তাই মেসে সবাই কে খাওয়াতে হয়েছে।।।ভাগ্যিস কৌস্তভ ছিল নাতো ওই মারুই বাজারের মাতাল গুলোর সাথে লাইন দিয়ে মদ কিনতে হতো।।।
সিনিওর দের এখানে অগ্রাহ্য করে এক দিন কাটানো যাবে না।।।
তাই আমিও খেলাম জীবনে প্রথমবার বিয়ার বেশ ভালই লাগলো খেতে।।।এক সিনিওর দিদি একদিন জোর করে সিগারেট ও খাইয়েছিল ।
কেমন যেনো বেপরোয়া ভাব এসে যাচ্ছিল ।।
কৌস্তভের বারংবার প্রপোজাল একদিন সারাও দিয়ে ফেললাম।।।
এখন আমিও প্রেম করি কৌস্তভের সাথে ।। ক্লাস এ পাশাপাশি বসি।।।ছুটির পর কৌস্তভ প্রত্যেক দিন আমাকে মেস অব্দি ছেড়ে দিয়ে যায় ।
রসমঞ্চ লালদীঘি লালঘর ঘুরে বেড়াই।। রূপকথা তে সিনেমা দেখি
।। লস্যি সেন্টার বা শ্রী হোটেল গিয়ে খাই।।।
বেশ ভালই চলছিল।।।কৌস্তভ আমুদে বেশ মজার কথা বলে,স্বপ্ন দেখে স্বপ্ন দেখায় ।
আমাদের অন্তরঙ্গতা বেড়ে গেছে অনেক বেশি।।সারারাত আমরা কথা বলি এখন ফোন ।।।আর নিন্দুকেরা বলে রাত ১১ টার পর আমার খাটের চারপাশেও নাকি নানা রকম অভিধান বহির্ভূত শব্দ ভেসে বেড়ায়।।
কিন্তু সকল আনন্দ উত্তেজনা যেখানে কেন্দ্রীভূত হয় সেখানেই মনে হয় বিপদ অত পেতে থাকে।।
আমাদের সম্পর্কের ২ মাসের মাথার একদিন ঘটনা, প্রথমদিনের অসহ্য তলপেটের যন্ত্রনায় মন শরীর দুটোই ভাল ছিল না।।
কিন্তু রাত ১১ টাই কৌস্তভ ফোন করে কথা বার্তা শুরু করলো মাঝ রাতের দিকে কৌস্তব বারম্বার উত্তেজনার বশে মনের আগল খুলে কথা বলার জন্য জেদ করতে থাকলো।।। আমার শারীরিক মানসিক অবস্থার কোনরূপ কথাই সে কানে তুলতে চাইলো না।।।
মুহুর্তের মধ্যে রাগের আগুনে পুড়ে ওর সাথে সম্পর্কের ওখানেই ইতি জানলাম।।
ভবিষ্যতে বহু বার বহু উপায়ে ও আবার জোড়া লাগাবার চেষ্টা করলেও সেই দিনের অপমান আমি কোনোদিন ভুলতে পারি নি। যে ছেলে নারীত্ব কে বুঝতে চাই না ।। তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখা মানে নারী জাতির অসন্মান করা।
যাই হোক গত দি মাসে কৌস্তভ অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।
সারাদিন কর্মব্যস্ত থাকলেও রাতের অন্ধকার যেনো তার অভাব বুঝিয়ে দেয়।। সেটা আরো প্রকট আরো গভীর করে তোলে মেসের অন্যদের তাদের প্রীয়তমদের সাথে কথাবার্তা হাসিমস্করা তে।।
একদিন হঠাৎ ইচ্ছে হলো অরকুট এ একাউন্ট খুলতে।।
বিভিন্ন বন্ধু হল চেনা অজানা অনেক অনেক বন্ধু ।।
এমনি এক বন্ধু হলো কেজি থেকে পাস আউট এক সিনিওর দাদা।।
দাদার লেখা স্ক্র্যাপ বুক দেখে দাদার ভক্ত হয় উঠলাম।।।
এক রাত্রে যখন অরকুট খুলেছি দেখলাম ফ্রেন্ড সাজেশন এ দীপ চ্যাটার্জী। কেমন যেনো সেই প্রথম দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।।। হটাত যেনো বুকের ভিতরে কেমন পাক দিয়ে উঠলো ।।রবীন্দ্রনাথ দাড়ি রামছাগল জিব জীবন এই শব্দ গুলো মাথার মধ্যে চরকিপাক খেতে লাগলো।।
ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট দেবার জন্য হাত নিসপিস করছিল কিন্তু কেনো জানি না কে আমায় বাধা দিছিলো।।
সামনে কোনো বন্ধু নেই যে এই সময় সাহায্য করবে।।।
হটাত অনলাইনে ওই পাস আউট দাদা কে দেখলাম।।
লাজ সরম ভুলে ওই দাদা কে অন্তরের কথা বললাম।।আমার ভয়ের কথা, হৃদয়ের গভীরে হওয়া ক্ষত কথা।।।
দীপের কথা কৌস্তব এর কথা সব।।।
সব শুনে দাদা বললো কি চাস এখন ??
জবাব দিলাম জানি না তবে আজ দীপ কে অরকুট দেখে কেনো জানিনা কেমন জানি হাত পা হালকা হয় যাচ্ছে, তল পেটে যেনো একটা বাতাস আটকে আছে যা বুকে বারবার ধাক্কা মারছে।।।
দাদা: তাহলে কথা বল দীপের সাথে।।
কিন্তু ও জেরকম চুপ চাপ আর গম্ভীর কথা যদি না বলে।
দাদা: না বললে বলবে না , কিন্তু আজ যদি একবার চেষ্টা না করিস ও কোনোদিন বলবে না এটা গ্যারান্টি দিতে পারি।
অগত্যা মনে জোর এনে অরকুট এ রেকুরস্ট পাঠিয়ে দিলাম।
তার পরের ঘটনা আপনরা হইতো কিছুটা জানেন আগের গল্পের মধ্যে দিয়ে যেটা জানেন না তা হলো দীপ কথায় কথায় একদিন বলেছিল ও বাবার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছে কেজির ৩ বছরে কোনরুপ প্রেম করবে না।।
তাই আমার ইচ্ছে ছিল ওর প্রতিজ্ঞা না ভাগানোর ।।
মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম ওর কলেজের শেষ দিনে ওকে প্রপোজ করবো যাতে ওর প্রতিজ্ঞা থাকে আর আমাদের সম্পর্ক নতুন দিশা পাক।।।
কিন্তু বিধি বাম কথায় কথায় জানতে পরলাম ওর মন আটকে রাখতে রাখতে পাথরের মত হয় গেছে ওর কাছে বিয়ে সংসার খালি করতে হয় তাই করবে।।।কোনো ভালোলাগা মন্দলাগা কিছুই নেই।।।
প্রচন্ড রাগ হলো অরকুট ছেড়ে দিলাম দীপ ও দেখলাম কোনো ভাবে যোগাযোগের চেষ্টা করছে না।।।
ভিতরে ভিতরে জ্বলতে লাগলাম পুড়ে ছারখার হতে লাগলাম।।।
তবুও ভীষ্মের প্রতিজ্ঞা ছাড়লাম না।।।।
পরের সপ্তাহে ফেওয়ার ওয়েল তার পর দীপ কে হইতো কোনোদিন দেখতেও পাব না।।।
হটাৎ ফোন কন্টাক্ট চেক করে দেখি সেই সিনিওর দাদার নম্বর সেভ করা আছে।।
কি মনে হলো করলাম ফোন
দাদা ফোন ধরেই বললো বল আবার কি সমস্যা??
কিসের উত্তর খুঁজে পাচ্ছিস না ।।।
তুমি জানলে কেমন করে যে আমি কিছুর উত্তর খুঁজছি।।।
দাদা: কারণ লাস্ট ৮-৯ মাসে কোনো কথা হইনি।।।আজ হটাত করে একদম ফোন করলি তাই বললাম।।।
সব কথা খুলে বললাম ,
সব শুনে দাদা বললো,
জীবনের দেখার ভঙ্গির মধ্যে বদল আন।।।তোর নিজের চিন্তা ভাবনা যতটা জরুরি অন্যের দিক থেকে ভাবা টাও জরুরি তাই এটা ভেবে দেখ কতদিন একটা ছেলে একটা বদ্ধতার মধ্যে ছিল, তার সেই জরতা ভাঙতে সময় লাগবে।।
কিন্তু কতদিন ৮-৯ মাস কি যথেষ্ট সময় নও।।
সে তো ম্যাডাম ডাক্তার এর যশের উপর নির্ভরশীল।।
ডাক্তার যত ভালো হবে রুগী তত তাড়াতাড়ি সেরে উঠবে।।।
এবার কিন্তু তুমি আমাকে অপমান করছো।।
না আমি তোকে এন্থু দিচ্ছি ।
কিন্তু একবারও বিয়ের ব্যাপারে আমার কথা ভাবল না,বললো বাবা মায়ের পছন্দ মত বিয়ে করতেও আপত্তি নেই।।এটা আমার অপমান নয়।
উহু নও ।
কেনো???
কারণ তুই ওর মনে সেই ভাবনার রেশ আস্তে দিস নি।।
আর বোনটি জীবনে ক্ষমা করতে শেখ নইলে প্রত্যেকের জীবনে একটা ভুল যদি তাকে জীবন থেকে দূরে সরিয়ে দিতে শুরু করিস তাহলে একদিন জনশূন্য হয় জাবি।।।
ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ না করলে ক্ষমা কর অপরাধীর স্বার্থে নয় নিজের স্বার্থে।।
নিজের শান্তির জন্য।।।।
তাহলে এবার আমি কি করবো???
সেটার উত্তর ত তোকেই খুঁজে পেতে হবে।।।শুধু এটুকু বলতে পারি প্রাথমিক ভাবে যেভাবে চেষ্টা করেছিলি সেভাবেই করতে পারিস।।।
পরের দিন গেলাম কার্ড প্রিন্টিং প্রেস এ।।।একটা মাত্র কার্ড তাও আবার পাত্রের নাম ছাড়া এমন আজগুবি দাবি শুনে বেশ কিছু প্রেস তাড়িয়ে দিল খাসা শব্দের সাথে।।।
শেষমেষ অনেক কষ্টে এক বন্ধুর সাহায্যে বানালাম একটা কার্ড।।।
তার পর প্রতীক্ষা,,,
আজ কার্ড টা দীপ কে দিয়ে এলাম,। কিন্তু এত খামখেয়ালি আমি যে ওর কথা শোনার জন্য দাড়ালাম না।।।।
ও যোগাযোগ করবে বা কিভাবে সেটাও ভাবলাম না।।। এখন এক উপায় যদি অরকুট কিছু রিপ্লাই দেয়,
অরকুট টা লগ অন করলাম ,
দীপের ম্যাসাজ এসেছে
সেই প্রথম দিনের মতো যেনো একটা হাওয়ার দলা বুকের কাছে আটকে আছে,,,
কাঁপা হাতে ম্যাসাজ খুললাম
লেখা
বুক দুপ
বুক ধুকপুক,,
বুকের ভেতর দামামা বাজছে,'
" কাল সকালেই বাড়ি চলে যাবো ভেবেছিলাম,কিন্তু ভাবছি কাল বিকেলে যাবো।।।
কাল সকালে ছিন্ন মোস্তার মন্দিরে যেতে পারবে আমার সাথে একটা মানত করেছিলাম ,পুজো দেব। আর হ্যাঁ তোমার ফোন নম্বর টা দাও।।কখন দরকার পরে
।।
এখন আমি আমার নম্বর টা ম্যাসাজ করছি
।।
শেষের চারটে নম্বর চোখের জলের দু ফোঁটা ঝাপসা করে দিয়েছে।।।।।।।
©️ কৌশিক
Comments
Post a Comment